আত্মার সৃষ্টি

ইশ্বর (খুব একটা মানবীয় নয়) মহাবিশ্ব সৃষ্টি করলেন, হয়ত নিজের ভেতর থেকেই, এবং ঈশ্বর হয়ে উঠলেন।

ঈশ্বর কি খুশি ছিলেন? আমরা খুশি হওয়া বলতে যা বুঝি, ঈশ্বর সম্ভবত তাকে পাত্তাই দেন না, তবে সেটা বোঝা তার জন্য নিশ্চয়ই অসম্ভব না।

ঈশ্বর কি একা ছিলেন? ঈশ্বর সবকিছুই ধারণ করেন, তার বাইরে কিছুই নেই। একা থাকা-না থাকার প্রশ্নই আসে না।

তিনি নিজের ভেতরে তারকাপুঞ্জ দেখেন, তারাদের জন্ম, জ্বলে যাওয়া, মৃত্যু দেখেন। সব নিজের মধ্যেই, শুধু সম্ভবনাই অসীম। …

আরো পড়ুন

ভাড়া

সন্ধ্যা নামলে অফিসগুলো থেকে হুড়মুড়িয়ে মানুষজন বেরিয়ে আসে। তারপর প্রাইভেট কার, রিক্সা, বাস…, ফুটপাথে হকার, তারপাশে হাইরাইজগুলো থেকে বেরনো আরো আরো মানুষ… সামগ্রিক ক্যাকোফনি… রাস্তায় পা ফেলার জায়গা থাকে না।

এমন সময় বের হলে মূল তাড়াটা থাকে এই রাস্তা ছেড়ে পালানো। কিন্তু সমস্যাটা এই যে অফিস পাড়ায় ছুটির সময়টায় মাঝারি দূরত্বেও রিকশা পাওয়া দুষ্কর। একে তো সোসাইটির রিকশা ছাড়া গুলশান যাবে না, তার উপর জ্যাম ঠেলে কেউ যেতেও চায় না। কিছুক্ষণ রিকশার খোঁজে এদিক-ওদিক ঘুরে একটা সোসাইটির রিকশা পেয়ে ডাক দিলাম, “মামা যাবেন! গুলশান এক!”

— আসেন মামা।
— কত?
— যা ভাড়া দিয়েন।

রিকশা গুলশান গেলো, যেমন যায়। সারাদিন পরিশ্রম ও ক্যাকোফনিতে রিকশাওয়ালারা ক্রমে মানুষ থেকে ভুত হয়ে ওঠে, আর ভুতের মত রিকশা টানে প্রাইভেট কারগুলোর ফাঁকফোকর গলে, লেন ছেড়ে ওভারটেক করে, সুযোগ পেলে ফুটপাথের ওপর দিয়ে। গুলশানে থামলো রবি অফিসের সামনের রিকশার লাইনের শেষে। মানিব্যাগ থেকে আমি পঞ্চাশ টাকা বের করে তার দিকে বাড়িয়ে দিলাম, নিলো না। আমি আরো দশ টাকা বাড়িয়ে দিলাম। তবুও নিলো না। রিকশাওয়ালা বললো, “টাকা চাই না।” …

আরো পড়ুন

আশ্বিনের রাত

Be clearly aware of the stars and infinity on high. Then life seems almost enchanted after all. — Vincent Van Gogh

আশ্বিনের রাতের আকাশ নীল—
সেখানে তারারা
আরো কাছে ভেসে আসে।

আশ্বিনের রাতের আকাশ ঠিক কালো নয়— নীল।
বাতাস শান্ত নদ,
তারারা সারাটা রাত ভেসে থাকে বাতাসে বাতাসে,
আকাশের নীলে? আমাদের নীলে?

আশ্বিনের রাত দূরত্ব কমিয়ে আনে মানুষ ও আকাশে।
মানুষের থেকে দূরে থাকা মানুষেরা
আশ্বিনের রাতে—
আকাশের কাছাকাছি হয়,
নীল হয়,
ক্রমশ আকাশ হয়ে যায়।

The Starry Night: সেকাল-একাল

থিয়ো ভ্যান গঘ্ ভিনসেন্টের একটি চিঠি পেলেন। তারিখ, ২০ সেপ্টেম্বার ১৮৮৯। চিঠিতে থিয়ো-র কাছে ভিনসেন্টের পাঠানো ছবির একটা ফর্দ ছিল তার ‘নাইট স্টাডি’-র। সেই ফর্দে পাঠানোর কথা থাকলেও একটি ছবির পক্ষে বিশেষ কোনো মন্তব্য ছিল না। এমনকি, পরে ছবিটিকে তিনি পাঠাননি, তেমন পাত্তাও দেননি। এই ছবিটিই ভ্যান গঘ্-এর স্টারি নাইট

ইন্টারনেটের দুনিয়ায় কারো যদি কোনো ক্র্যাফট্ আয়ত্ত্বে থাকে, সে কেক বানানো হোক, নখে রঙ করা হোক, কিংবা ছবি আঁকা, সবার একটা পছন্দ স্টারি নাইট। কোথায় নেই ছবিটি? লকেটে তো আছে, আন্ডারওয়্যারেও1 আছে। এগুলোর কোনোটাতেই আমার আপত্তি নেই, থাকলেও আসলে কিছু যায় আসে না। আমার আগ্রহের বিষয় স্টারি নাইটের একাল-সেকালে। একালে স্টারি নাইটের বিস্তার তো বললাম, সেকালে স্টারি নাইট একটিই আছে, মাস্টারপিস স্টারি নাইট, আগে সেই স্টারি নাইটের কথা বলি।

  1. আমাজনে কিনতে পারবেন। 

আরো পড়ুন

জ্যোৎস্নায়

জ্যোৎস্নায়-
একটি নিরাকার হরিণ
নির্দেহ, নির্ভার, কস্তুরির ঘ্রাণহীন
ছুটে গেলো নৈঋত আকাশে।

জ্যোৎস্নায়-
আমাদের ছোট নদী পারে
সংশয়েরা ক্যাম্পিং করে।
আমরা রূপোলি হলে
পরীক্ষার মার্কস্ সব ব্লার হয়ে যায়।

জ্যোৎস্নায়-
আমার বয়স বেড়ে পৃথিবী সমান হয়ে যায়।
তোমার শরীর চেনে সকালের কুসুমের দ্যুতি।
মার্কশীট ভেসে যায় কাগজের নৌকোর মত।
নিরাকার হরিণেরা বসে থাকে
তোমার পায়ের কাছে এসে।
ভয়াবহ স্বাধীনতা মিলে যায় একদম অবহেলে- জ্যোৎস্নায়।
জ্যোৎস্নায়।