তোমার সঙ্গে

তোমার সঙ্গে আমার একটু কথা ছিল।

অনেক আকাশ আটকে আছে বুকের ভেতর-
নীলাভ শরীর;
তোমার সঙ্গে আমার একটু ব্যথা ছিল।

তোমার সঙ্গে এই জীবনের হিসেব-কিতেব
আর জনমে মিলিয়ে নেবো,
চুকিয়ে দিও নীলকণ্ঠ ফুলের দামে।

তোমার সঙ্গে পাঁজর ভাঙার গল্প ছিল।

পথের বাঁকে
কোথায় গেলে?
পথের বাঁকে
দেখছি না যে!
মাতাল হাওয়ায়
মেহগনির বীজের মতন
ঘুরতে ঘুরতে ছিটকে গেলাম,
বুকের থেকে সরে এলাম
বুকের থেকে অনেক দূরে-
অভিমানে?

তোমার সঙ্গে আমার অনেক মান-অভিমান-
চুম্বনে সব গেঁথে নিয়ে
সাজিয়ে দিও আমার ব্যথার উপাখ্যানে।

তোমার সঙ্গে আমার একটা জীবন ছিল।

কসমস : কার্ল সেগান

কসমস কসমস1 প্রথমত কার্ল সেগানের একটা বিখ্যাত টিভি ধারাবাহিক। বিষয়বস্তু আমাদের মহাবিশ্ব। বইটি কিছুটা তার লিখিত সংস্করণ।

বইটির তথ্যগুলোর কথা বলতে গেলে যারা সমসাময়িক বিজ্ঞানের সব খবর রাখেন তাদের কাছে পুরনো খবর তবে এখনো প্রাসঙ্গিক সাধারণ মানুষের জন্য। আর শুধু বিজ্ঞান না, বিজ্ঞানের ইতিহাসও বেশ চমৎকারভাবে উঠে এসেছে। উঠে এসেছে আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রজ্ঞা যা ধর্মীয় ও ভাববাদী দর্শন বারবার দমন করতে চেয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাস আর সেগানের চমৎকার লেখনীর জন্য বইটা আমার ভালো লেগেছে।

উঠে এসেছে নানান কথা। তবে সবগুলোই বুঝি কেন্দ্রে রাখলো আমাদের পরিচয়। এই মহাবিশ্বে আমরা কী, কতটুকু ক্ষুদ্র, কতটুকু মূল্যবান, কতটুকু ক্ষমতা আমাদের এই বিষয়গুলো উঠে এসেছে বৈজ্ঞানিক সত্যের সাথে। প্রাসঙ্গিকভাবেই উঠে এসেছে মানুষ নিজের ক্ষুদ্রতা অস্বীকার করতে, কোনো ঐশ্বরিক স্বত্তার মান বজায় রাখতে কীভাবে বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়।

  1. কসমস (cosmos) শব্দটি গ্রীক, অর্থ শৃঙ্খলা, chaos এর বিপরীত শব্দ এটি। 

আরো পড়ুন

ইন দি ওয়ার্ল্ড : ম্যাক্সিম গোর্কি

ইন দি ওয়ার্ল্ড ম্যাক্সিম গোর্কির আত্মজৈবনিক লেখাগুলোর দ্বিতীয় খণ্ড এটি। বোধকরি ‘মাই এপ্রেন্টিসশিপ’ নামেও বইটি প্রচলিত। প্রথম বইটির শেষ থেকে এটি শুরু।

বইটায় গোর্কির কৈশোরের কর্মজীবনের ছবি পাওয়া যায়। যদি ছবি আঁকা হত তবে পাওয়া যেত বিষাদময় অসংখ্য রঙের সমাহার।

এই বইয়ের গোর্কির স্বপ্নেও ভাবার অবকাশ ছিল না প্রথাগত শিক্ষা নেওয়ার। তবে প্রচণ্ড জ্ঞানের ক্ষুধা, গল্পের ক্ষুধা ছিল তাঁর। আর ছিল পায়ের তলায় সর্ষে। কখনো একজন জুতোর দোকানের কর্মী থেকে আর্কিটেক্টের শিক্ষানবিশ, সেখান থেকে স্টিমারের রসুইয়ের কর্মী, পাখি ব্যবসায়ী, ধর্মীয় বই আর ছবির দোকানে কাজ, ছবি আঁকতে শেখা, আবার শিক্ষানবিশ… এভাবেই চলতে থাকা। এরমাঝে বই পড়ার অদম্য ইচ্ছে। সুযোগ পেলেই বই নিয়ে বসা, বইয়ের জন্য অপমানিত হওয়া, বইয়ের জন্য স্নেহ পাওয়া, বই থেকে স্বপ্ন দেখা। …

আরো পড়ুন

আশ্বাস

তোকে আমি একশো বছরের রোদের সত্ত্ব লিখে দেবো।
তোর দিনগুলো হবে শুধু রৌদ্রকরজ্জল।
তোকে কিনে দেবো এক মেঘে ন্যুব্জ আকাশ-
তোর নূপুরের সুর হবে,
তোর কান্নার জল হবে।
তোর থাকবে একটা নিজস্ব পাহাড়, ঝর্ণা, নদী আর সমুদ্র।
প্রয়োজনে বৃহস্পতির থেকে চাঁদ ছিঁড়ে এনে,
ঘুরিয়ে দেবো পৃথিবীর চারপাশে,
তোর হবে একটা নিজস্ব চাঁদ।
মোড়ের মাথার পোষাপ্রাণীর দোকান থেকে
কিনে দেবো এক ঈশ্বর।
চেন দিয়ে বেঁধে রাখবি সদর দরজায়।
কিনে দেবো হৃদয়, হৃদয়ে রাখার মানুষ।
কিনে দেবো অনুভূতি,
খাঁটি এবং ইমিটেশন।
লাল স্পর্ধা,
ধূসর বিষাদ,
বেগুনী দম্ভ,
ম্রিয়মাণ নীল রঙের সম্পর্কের সুর,
নীল ভালোবাসা
নীল কষ্ট।
এই অস্বাভাবিক প্রাচুর্য্য যদি অসহ্য মনে হয়।
যদি ইচ্ছা জাগে নীলকণ্ঠী হতে
তাহলে কিনে দেবো নীল বিষও…