রৌদ্রকরোজ্জল

রৌদ্রকরোজ্জল-
মেঘের দুপুর থেকে ভেঙ্গে পিষে
নিঙড়িয়ে জীবনের স্বাদ-
আমাদের বেঁচে থাকা৷
তবু এক আততায়ী বিষাদের ছায়া
ছুঁয়েছে আমার ত্বক, মজ্জায় ছুঁয়েছে প্রবল৷

শহর গরম গায়ে
সারারাত কাতরায়৷
কপালে জলের হাত, শীতল মমতা
কতকাল মাখেনাই৷
জ্বর গায়ে সারারাত শহরের প্রলাপ বকুনি৷

শহরের চোখ লাল,
আমারওতো পাঁজরে নীল আঁকিবুকি৷
আমরা বদল করি আল্পনা, আঁকা পট-
ক্রিমসন সন্ধ্যা বা ঘোলাটে আঁধার৷

আমার বিষাদ মাখি শহরের গায়ে,
আমার হাতে ও মুখে জ্বরের আবীর-
আহা! এই ঘোরে ছোঁয়া হলে দয়িতার ঠোঁট
মিলবে কি জল? রাতভর দেহজ শিশিরে
এঁকে দেবে এক হাসি
রৌদ্রকরোজ্জল?

Numb

আমার বিনিদ্র রাত আমার একারই কথা বলে।
আমার চোখের নীচে অন্ধকার ঘন হয়ে দাগ-
তবু তোর দু’চোখের নিশ্চিত কাজল হবেনা।
আর সব দেহ ছুঁয়ে মেখে নিয়ে আর কারো স্বেদ
আরও বেশি কমনীয় ছিল বুঝি কারো কারো চোখ
তবুও পীচের প্রেম মাখেনা জুতোর শুকতলা
তবু কারো হাত ধরে রোদ্দুরে হাঁটিনা এখনো।

নক্ষত্রের রাতে আজ ছায়াপথ সেজেছে রঙ্গীন-
আমি তার রঙে তোর শরীরের সুবাস খুঁজেছি।
যেভাবে আমার প্রেম ছড়িয়েছে মূল-উপমূল
তোরই দেহের সব শিরা-উপশিরা-
জুড়ে আছে যার অবশেষ,
যেভাবে আমিও তোর গভীরে ডুবেছি বহুবার,
সেভাবে বাসিনি ভালো বলে
আর কারো ঘ্রাণে নেই তৃপ্তির রেশ
আর কোনো চোরাস্রোতে এখনো ভাসিনি।
তবুও এখানে এই নক্ষত্রের নীচে
আমি কোনো বিরহের দোকান খুলিনি।

এক শহরে এক এলিয়েন

এই শহরটা আমার কথা জানেনা ঠিক।
চেনেনা ঠিক
পায়ে পায়ে ধুলো-কাদায় আপন হতে চায়ও যদি-
আমি ঠিকই এড়িয়ে যাই।

এই শহরটা তোমার বুকের ঘ্রাণে বিভোর
পাগলামিটার স্বাদ চেনেনি।
সে তো কেবল পথ চিনেছে,
রিকশা-চাকার গ্রীজে কি আর
লাবন্য কী জানতে পারে?

এই শহরটা বোঝে না এই মনের খবর।
ধরো, ভীষণ কান্না পেলো, মুখ লুকোবে-
দেখবে তখন গোটা শহর তোমার দিকেই
ড্যাবডেবিয়ে তাকিয়ে আর
দেখতে পাবে
বুকের ভেতর ক্রমশঃ সব গুটিয়ে যায়।

আমি কেন এই শহরেই বাঁচতে এলাম!
এ শহর এই মৃতের নগর
এখানে কি কেউ বেঁচেছে?
তুমি যখন এই শহরেই
আমায় রেখে হারিয়ে যাও ভীড়ের ভেতর
অনেক মানুষ, আমি তবু একলা ভীষণ
পায়ে পায়ে বাড়ির পথটা হারিয়ে ফেলে
পথের মাঝে দাঁড়িয়ে যাই স্তব্ধ, স্থবির।
আমি তখন এই শহরই
এই শহরও আমার মতই
চলছে এবং
জ্বলছে, জ্বালায়,
পোড়ায়, মারে
কাঁদায়, কাঁদে
কিন্তু ভিতর ভীষণ ফাঁপা-
এ্যাসফল্টে বাঁধাই জীবন।

Jan 05, 2016, 12:23 AM
Dhaka

ফেরারী

আঁধার সাঁতরে যদি ফিরে আসি ঘরে,
অথবা টাওয়ারের চূড়ো থেকে গোটানো ডানায়
ঘুম চোখে
ল্যাম্পপোস্ট সারি সারি
রানওয়ে চেনায় নগরী,
তার বুকে নেমে
ঘেমে
ফিরি।
জানি তুমি নেবেই আমায়।
বাউন্ডুলের রোখ
কিনবে না কোনো পুঁজিপতি,
তাই তার নাম নেই পারফিউমের
টার্গেট পিপলের মাঝে।
তবুও ভয় কী বলো?
আমি স্নান করি স্বেদে,
হৃদয়ের ঘ্রাণে
হৃদয় ভিজেছে আর
সুগন্ধী মজ্জায় মিশেছে প্রবল।
সে প্রবল কামনার স্রোতে
আমি ডুবে ভেসে উঠি
মহাকাল যেখানে স্থিরতা সত্য মেনেছে
সেখানে কে কিনবে আমায়?
কে খুঁজবে ফেরারী আমায়?
আমি তাই পালিয়ে আসবো
এ শহর, শহুরে আবর্জনা
আর ঘোলাটে আকাশ এই
নিদারুণ মিথ্যে সাক্ষ্য দেয় নিয়ত প্রচুর।
আমি সেই আদালত থেকে
আর সেই জেলের প্রাচীর আর জেলারের চোখ
ফাঁকি দিয়ে
যদি এক বনান্তের গাঢ় ক্যামোফ্লেজে
বয়ে এনে আদিম কামনা
জানি তুমি নেবেই আমায়।
বাহুডোরে লুকোবে তোমার
এই গোটা পৃথিবী-ফেরারী।

Dec 20, 2015
ঢাকা

পাতা

পাতায় পাতায়
অন্ধকারের
দেয়াল তোলা
মৃত্যুকূপ।
পাতায় পাতায়
ভবঘুরের
পায়ের তলায়
সর্ষে-ভুত।
পাতায় পাতায়
সবুজ পাতায়
কার ভরেছে
ব্যলকনি?
পাতায় পাতায়
গাঢ় ব্যাথায়
নিমগ্ন কার
প্রাণখানি?