পুতুলনাচের ইতিকথা: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
এতদিন বইটা না পড়া রীতিমত একটা অপরাধ। সত্যিকারের কালজয়ী লেখা বলতে যা বোঝায় এ হলো তাই।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের চরিত্রগুলো সাদামাটাভাবে শুরু হয়। তাদের আচরণ, গন্তব্য সব সাদামাটা। দরিদ্র আদর্শ দরিদ্র, জোতদার ছেচড়া জোতদার, গ্রাম্য ডাক্তার যথার্থ গ্রাম্য ডাক্তারের মতই ফিসের তাগাদা দেয়। এবং, শেষমেশ তাদের নিয়তিও এমনকিছু আশ্চর্যজনক না। আশ্চর্যের ব্যাপার তাদের হঠাৎ কোনো ব্যবহার, কোনো কথা, কোনো হাসি। ‘শেষের কবিতা’য় রবীন্দ্রনাথ লাবণ্যের প্রথম পরিচয় যেমন পাহাড়ের পটভূমিতে বিদ্যুতঝলকের মত দেখিয়েছিলেন, চরিত্রগুলো তেমন কোনো ঝলকে ঝলকে বোধি দেয়, জানিয়ে দেয় যে মানুষের ভেতরে আরো কোনো মানুষ থাকে যে তার গড় মানবিকতার উর্ধ্বে। মানুষ তারা, এমন মানুষকে বিশ্বাস করতে ভালোলাগে, ভালোবাসতে ইচ্ছে হয়।
ফলতঃ জোতদার গোপাল পুত্র গৃহত্যাগী যেন না হয় তাই নিজেই গৃহত্যাগী হয়, মতি কেমন বাউন্ডুলের যোগ্য গিন্নি বনে যায়, শশী শেষ মুহুর্তে আবিষ্কার করে কুসুমকে সে ভালোবাসত, যাদব স্বেচ্ছামৃত্যু বেছে নেন।
উপন্যাসে অসাধারণ সব ঘটনা সাধারণ জীবনের সাথে মিশে যায়। মনে হয় না বানানো কথা, মনে হয় রোজকার কথাই, আমার দেখার চোখ নেই বলে এমন দেখিনা।
বইটার ইপাব সংস্করণ পেয়েছি শিশুকিশোর.অর্গ-এ। এখন ই-বইপত্র-তেও পাওয়া যাবে। বইটার গুডরীডস্ পেজ।