মাই চাইল্ডহুড : ম্যাক্সিম গোর্কি
সবচেয়ে ভালো বইগুলো পড়া শেষ করেই বোধহয় কিছু বলা কঠিন। এমনভাবে আচ্ছন্ন করে রাখে যে নিজেকে আলাদা করে দাঁড় করিয়ে তার ভালোমন্দ বিচার করা কঠিন হয়ে পড়ে।
বইটায় আমার খারাপ লাগেনি কিছুই। কষ্ট লেগেছে, মানুষের নীচতায়, হীনতায়। গোর্কির লেখা বরাবরই মেদবর্জিত। নিপাট সত্যভাষণ গোছের। রিয়ালিস্ট লেখার মহাযজ্ঞের প্রথমদিককার সাগ্নিক তিনি। রিয়ালিস্ট মানেই কিন্তু নীরস না। কোনোকিছুই কি আসলে আনরিয়েল? প্রবল পরাবাস্তব লেখাও লেখকের নিজের রঙে রাঙানো বাস্তবতার আখ্যান।
গোর্কির আত্মজৈবনিক লেখা এটি। তার বাবার মৃত্যু থেকে মায়ের মৃত্যুর সময়কাল পর্যন্ত এই বইয়ের পরিধি। রুশ গণমানুষের জীবনযাপন উপজীব্য। গণমানুষ সবসময়ই দরিদ্র ও শ্রীহীন। এখানকার অধিকাংশ চরিত্রও তাই। এরমধ্যেও সৌন্দর্য থাকে। গোর্কির চোখ ছিল সেই সৌন্দর্য দেখার। চমৎকার মাতামহী আর তার অজস্র গল্প, বাবা-মায়ের প্রেম ও সংসার, দারিদ্র, শিক্ষা, অপমান এমনকি রাস্তার টোকাইদের জীবনযাপন, এই সবকিছুর যে কোণাওয়ালা, ধারালো সৌন্দর্য, ভয়াবহ ক্ষুধার বিভীষিকাময় সৌন্দর্য, সেই সৌন্দর্যে উপাখ্যান ‘মাই চাইল্ডহুড‘।