অক্রীতদাসের ভাষ্য

এক

এখনো ঘোরের মত চোখে কেন তুই লেগে থাকা?
আমার ঘুমের সাথে তোর কেন এমন বিরোধ?
অনেক রোদের তাপে ঝলসাতে আমার দুচোখ
অদৃশ্য সূর্যের মত রাতজুড়ে তোর থাকে ছায়া।

দুই

অভিমান তীব্র হলে পরে
আমার ঘামের ঘ্রাণ সুপুরুষ হয়।
আমার এ দেহ ছুঁয়ে, গিয়েছে যে বিগত সময়-
অতৃপ্তির শ্লেষ রাখে ওষ্ঠে-অধরে।

প্রিয় প্রিয় অনুভূতি বলিকাঠে চড়ালে, নিকষ
আধাঁরের বুক চিরে ভেসে যায় নির্মোহ রক্তের স্রোত,
তবুও মোহের ঘোরে আমার এ শরীর বিবশ
অনেক ঋণের ভারে ঋণী যেন ক্রীতদাস তোর।

তিন

আর তোর চোখ ছুঁয়ে
ফুরনোর পথে গেলে কিশোরী বিকেল-
আমার পায়ের নীচে
ঝরা পাতা কেঁদেছে নিবিড়।
আমার শোণিত-স্রোতে
যতোটুকু বয়ে চলি আরোপিত প্রেম,
যতোটুকু ভাসে অবয়ব
যতোটুকু পাওয়া যায় তার রূপরেখা
তাতেই অতৃপ্তি বাড়ে
দারুণ লোভীর মত
আমি শুধু খুঁজি ভালোবাসা।

চার

আর তোর ক্ষতজুড়ে ছোঁয়ালে আঙ্গুল আর ঠোঁট,
ছোঁয়াচে প্রেমের ঘোরে ফিকে হবে নিবেদিত রাত।
আর তোর হৃদয়ের দোরে, করাঘাতে আর্তি জানালে
শিউলি ফুলের মত, ঝরে যাবে নমনীয় স্বেদ।
বুকভরে ঘ্রাণ নিয়ে আমি যদি গভীরে হারাই
আমি যদি চেনা সব দেহ-রঙ-ব্রাশের আঁচড়
ভুলে হই নতজানু, অধিকৃত দেহটির স্বাদে
তোর কি তৃপ্তির কিছু খুব বেশি হবে হেরফের?

পাঁচ

আমাকে মাটির টানে আটকাতে কেন এত শখ?
আমিতো বানের জলে কবে গেছি ভেসে।
সময়ের স্রোতে আমি ভাসি মৃতবেশে
আমার শরীর-মনে শ্যাওলার সিক্ত বসতি।
আমার রক্ত থেকে কেন মুছে যাচ্ছে না তোর সুঘ্রাণ?
ফুসফুস পেলে নিকোটিন, আমার হৃদয় কেন তৃষ্ণার্ত থাকে?
আমার ওষ্ঠ কেন ভুলে যায় সহজিয়া প্রেমের বয়ান?
কেন আমি ভালোবেসে তীব্র আবেগে
ধুয়ে মুছে তুলে রাখি ভঙ্গুর কাঁচের পৃথিবী?