কুণ্ডুমশাই ও ঢাকা ওয়াসা

কুণ্ডুমশাইয়ের রাজত্ব খুলনায়। বড়সড় একটা বাড়ি তাঁর। সে বাড়ির সাথে মৌচাকের তুলনা করলে দারুণ মেলে। শুনেছি, এক চোর নাকি ওই বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে বেরনোর পথ মালুম করতে না পেরে হতাশ হয়ে বসেছিল। :laughing:

কুণ্ডুমশাই ছিলেন সেকালের ম্যাট্রিকপাশ, চাকরিতে পুলিশের হেডক্লার্ক। হিসেবে পোক্ত তার মাথা, সেজন্য সুনামও ছিল যথেষ্ট। দুটি বিয়ে করা এই রসিক মানুষটি দুটি বউকেই সুয়োরাণী করে রেখেছেন। মাতৃভক্তিও কম না।

যৌবনে কুণ্ডুমশাই টাকা কম আয় করেননি। আর জমির পরিমাণটাও শহরের পরে কম না। কিন্তু হায়! সামনে পিছনে লন-বাগানওয়ালা সুরম্য প্রাসাদ না বানিয়ে বানালেন মৌচাক।

তা, সেজন্যে যদি দোষ দিতেই হয় তা দিতে হবে তার অস্থিরতাকে। হাতে টাকা এলো তো কিছু করা চাই। গোটাতিনেক রাজমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি ছিল মাইনে করা। তাদের দিয়ে আজ এখানে দেওয়াল ভাঙছেন, কাল গড়ছেন রান্নাঘর পুবমুখো করে, পরশু মাছ চাষের চৌবাচ্চা। তারপর দেওয়াল ভাঙা রাবিশে চৌবাচ্চা ভর্তি হলো, এদিকে পুরনো দেওয়াল উঠলো নতুন করে, আবার রান্নাঘর ভেঙে করা হলো দক্ষিণমুখো। সমস্ত বাড়ি এক কর্মযজ্ঞ! এতে করে একটা বিল্ডিং দোতলা হলো, আর বাকিগুলো থেকে গেলো স্থান-কালের গহ্বরে গভীর অনিশ্চয়তায়।

ঢাকা এসে আবার কুণ্ডুমশাইকে মনে পড়লো। ওয়াসা বুঝি এখানে কুণ্ডুমশাইয়ের এক দৈত্যাকার রূপ। দিনরাত খোঁড়াখুঁড়ি, রাস্তায় জল-কাদা, কখনো আটকে রাখা। এরসাথে আছেন সড়ক বিভাগ বা রাজউক। ওয়াসার কাজ হলে তারা রাস্তা সারবেন, রাস্তা সারা হলে ওয়াসা আবার পানির লাইন ঠিক করবে, তারপর আবার পীচ ঢালা, খুঁড়ে ফেলা, আবার ঢালা। বোধকরি, এশহরের কুণ্ডুমশাইরা ভয়াবহ বোকা। অথবা ভয়াবহ বুদ্ধিমান শয়তানও হতে পারেন। খরচ না দেখালে ফান্ড চাইবেন কোন মুখে? :persevere:

‘হিজিবিজি’-গুলো বস্তুতঃ কিছু ছেঁড়াখোড়া, খানিকটা অসংলগ্ন এবং অনেকটাই আবেগাক্রান্ত ক্ষুদ্রদেহ লেখা। খানিকটা দিনলিপির মত। একটা বিষয়ে অনেকটা না ভেবে বরং অনেকটা অনুভব করে লেখা।